১/৩/১৯,ওয়েবডেস্কঃ গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় ১৪ মে ইটাহারের বেকিডাংগায় ভোট গ্রহণের কাজে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন ৪৮ নম্বর বুথের প্রিসাইডিং অফিসার তথা শিক্ষক রাজকুমার রায়। পরদিন সন্ধ্যায় রায়গঞ্জের সোনাডাংগি এলাকায় রেল লাইনের ধারে তার ক্ষত বিক্ষত মৃত দেহ পাওয়া যায়। এবার সেই মৃত্যু মামলায় হাইকোর্টে জোর ধাক্কা খেলো রাজ্যসরকার।গত পঞ্চায়েত ভোটে কর্তব্য পালন করতে গিয়ে নৃশংস ভাবে নিহত প্রিসাইডিং অফিসার রাজকুমার রায়ের মৃত্যু মামলায় রাজ্য প্রশাসনের তরফে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চাইলো কলকাতা হাইকোর্ট৷ আজ, দুপুরে মামলার শুনানিতে পঞ্চায়েত ভোটের সময় নিহত প্রিসাইডিং অফিসার রাজকুমার রায়ের নিখোঁজ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার পর্যন্ত শেষ ১১ ঘণ্টার হিসেব চাইল আদালত৷ অবিলম্বে সেই রিপোর্ট জমা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। গত পঞ্চায়েত ভোটে ডিউটিতে গিয়ে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন প্রিসাইডিং অফিসার রাজকুমার রায়৷পরেরদিন তাঁর ক্ষত বিক্ষত মৃতদেহ পাওয়া যায় রায়গঞ্জে রেল লাইনের ধারে। তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়৷ যদিও উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে রাজকুমার বাবুর৷ এই ঘটনার পর ভোটকর্মীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভ তৈরি হয়।আন্দোলনে নামে ভোটকর্মী থেকে শুরু করে গোটা শিক্ষক কূল। গোটা ঘটনার পূর্ণঙ্গ তদন্তের দাবিতে মামলা দায়ের হয়৷ রাজকুমার রায়ের পরিবারের তরফ থেকে সিবিআই চেয়ে হাইকোর্টে মামলা করে। কিন্তু সেই দাবিকে নসাৎ করে রাজ্য সরকার সি আই ডি দিয়ে মামলা শুরু করে।
আজ ১ লা মার্চ, কলকাতা হাইকোর্টের তরফে সকল তথ্য চেয়ে পাঠানোর ঘটনায় বিপাকে পড়ল রাজ্য প্রশাসন। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের৷ ঘটনা ঘটার ১০ মাস পর এই তথ্য প্রশাসন দিতে পারে কিনা সে দিকে তাকিয়ে সকলেই। এর আগেও রায়গঞ্জে প্রিসাইডিং অফিসার রাজকুমার রায়ের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তের গতি প্রকৃতি নিয়ে ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ তলব করেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী৷ মামলার শুনানিতে মৃত প্রিসাইডিং অফিসারের মা অন্নদা রায়ের আইনজীবী উদয়শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় আদালতে দাবি করেন, ‘রাজকুমারের মৃত্যুর কোনও তদন্ত করেনি পুলিশ।
সঠিক ময়নাতদন্তও হয়নি। ময়নাতদন্তের কোনও ভিডিও ফুটেজ রেকর্ড করা হয়নি। একজন প্রিসাইডিং অফিসারের মৃত্যুতে নির্বাচন কমিশনও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।’’ তিনি সিবিআইকে দিয়ে পুনরায় গোটা ঘটনার তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন। রাজ্যের আইনজীবি অমিতেষ বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতে জানান, ‘ইতিমধ্যেই সিআইডি ঘটনার তদন্ত করেছে।’
প্রসঙ্গত, এই মৃত্যুর পর রাজ্য জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।কিন্তু আজও তদন্ত করে সি আই ডি এটাই প্রমান করতে পারলো না যে মৃত্যুটা খুন না আত্মহত্যা। আর এতেই তৈরি হয়েছে তীব্র ক্ষোভ। ইতিমধ্যে সরকারি কর্মীরা ও শিক্ষক-শিক্ষিকা কর্মীরা লোকসভা নির্বাচনের সময় বুথকেন্দ্র গুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতি দাবি জানিয়েছেন।